(বাংলাদেশ প্রতিদিন) প্রকাশ : মঙ্গলবার, ৬ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা আপলোড : ৫ মার্চ, ২০১৮ ২৩:১৮
পুরনো দিনের কত কথা মনে পড়ে
- বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম |
![]()
|
মানুষ পাখির চেয়েও বেশি
ছোটাছুটি করে। পাখিরা বাতাসে ভর দিয়ে আকাশে ওড়ে ঠিকই, মানুষ যন্ত্রে ভর
করে পাখির চেয়েও অনেক অনেক বেশি ওড়ে। শীতের দিনে সাইবেরিয়ার পাখি
আমাদের দেশে আসে, কিন্তু মানুষ তার চেয়ে অনেক বেশি হাওয়াই জাহাজে ঘুরে
বেড়ায়। সেদিন গিয়েছিলাম নলুয়ায় এক বাউল গানের আসরে। আনোয়ার হোসেন প্রতি
বছর তার পীরের নামে আসর করত। গেল বছর সে মারা গেছে। তার ছেলে জুয়েল,
লাবলু এবং মেয়ে রিংকু, বর্ণা, ঝর্ণা আমাকে বাপের মতো মনে করে। কয়েক বছর
যাওয়া হয়নি, তাই গিয়েছিলাম। গায়ক-গায়িকা ছিল মনির সরকার আর আঁখি দেওয়ান।
ভেবেছিলাম দুজনের বন্দনা শুনে ফিরব। বলেছিলাম, তোমরা বন্দনা গাও তারপর
যাব। সাড়ে ১০টা থেকে আঁখি দেওয়ানের বন্দনা শেষ হতে ১২টা বেজে যায়। তাই
মনির সরকারের বন্দনা আর শোনা হয়নি। রাত ১টায় সখীপুরের বাড়িতে
ঘুমিয়েছিলাম। ঘুম ভালোই হয়েছিল। সকালে উঠে প্রথম যা শুনেছি তা শুনতে
চাইনি। আগের দিন মঙ্গলবার। প্রায় আট বছর মঙ্গলবারে বাংলাদেশ প্রতিদিনে
নিয়মিত লিখি। সেদিন আমার লেখা ছাপা হয়নি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ভাষা
সম্মেলনের বক্তৃতা পাতাজুড়ে ছাপা হয়েছিল। সরকারপ্রধানের ভাষার মাসে
ভাষার ওপর সরকারি বক্তৃতা পাতাজুড়ে ছাপা হলে দোষের কী। কিন্তু পাঠকের
কেউ কেউ তাতেও দোষ দেখেছেন। এসব কারণে কেন যেন ভালো লাগে না। এত
অসহিষ্ণু হলে দেশ বা সমাজ চলে? চলে না। যাই হোক, দুপুরে টাঙ্গাইল ফিরি।
কথা ছিল পরদিন শেরপুরের বাছুর আগলার এ কে এম শহীদুল হকের চেহলামে যাব।
শহীদুল হক এক অসাধারণ মানুষ ছিলেন। নির্বিবাদী শহীদুল হক শেরপুরের
চন্দ্রকোনার বাছুর আগলা থেকে কীভাবে টাঙ্গাইল এসে টাঙ্গাইলের মানুষ হয়ে
গিয়েছিলেন ভাবতেই অবাক লাগে। কোনো দিন কোনো শক্তি দেখাননি, কারও সঙ্গে
কোনো ঝগড়া-ফ্যাসাদ করেননি। কত মানুষ যে তাকে ভালোবাসত তার প্রমাণ
বিবেকানন্দ স্কুল মাঠে রাতের আঁধারে তীব্র শীতে হাজারো মানুষ তার
জানাজায় উপস্থিত হওয়া। সদাহাস্য খোলামেলা একজন মানুষ যার সঙ্গে মিশতেন
তাকেই মুগ্ধ করতেন।
|
NEXT > |